
ওষুধ ছাড়াই পিরিয়ডের ব্যথা- পিরিয়ডের সময় নারীরা পেটের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পেইন কিলার খেয়ে থাকেন, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
সবচেয়ে ভালো হয় ওষুধ না খেয়েই ব্যথা দূর করতে পারলে। আর সেজন্য আছে ঘরোয়া কিছু উপায়।
চলুন জেনে নেই কী করলে এ সময় ব্যথা উপশম হবে-
ভিটামিন ডি ও বি:
এই সময়ে শরীরে ভিটামিন ডি-র জোগান দিন। এতে হাড় ও পেশী ব্যথার সঙ্গে লড়তে পারবে। এছাড়া ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খান।
আনারস:
অনেকে মনে করেন, পিরিয়ডের সময় আনারস খাওয়া যাবে না। আসলে এটি ঠিক নয়। বরং এই সময়ে আনারস বা আনারসের জুস খান। ব্যথা দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
আদা:
আদার অনেক গুণের কথাই তো জানেন। এটা কি জানেন যে পিরিয়ডের সময়ে মারাত্মক পেটে ব্যথা থেকে উপশম দিতে পারে এই মশলা? জ্বর বা মাথাব্যথা হলেও অনেকে আদা চা খান। তেমনই পেটে বা কোমরে ব্যথা হলে আদা চা খান। অথবা রান্নায় আদা বেশি পরিমাণ দিন।
যোগব্যয়াম:
হরমোনের ওঠানামার জন্যই এই সময়ে পেটে ব্যথা হয়। তাই হরমোন ঠিক করতে রোজ আধ ঘণ্টা করে অন্তত যোগব্যয়াম করুন। এতে পেশী শক্তিশালী হয় ও হরমোন জনিত সমস্যাও কমে যায়। ফলে পিরিয়ডের সময়ে অত কষ্ট হয় না।
চকোলেট:
ঋতুস্রাবের সময়ে মেজাজও ভালো থাকে না। অবসাদ, ক্লান্তি এগুলোর জন্য আরও অসুস্থ লাগে। মেজাজ ভালো রাখতে তাই আইসক্রিম, চকোলেট খেতে পারেন।
এড়িয়ে চলুন:
পিরিয়ডের সময় বেশি তেল-মশলা জাতীয় খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
যেসব লক্ষণ গুলোতে বুঝবেন ডেঙ্গু জ্বর
শুরু হয়েছে বর্ষা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে শুরু করেছে। ডেঙ্গু এডিস মশাবাহিত একটি ভাইরাস রোগ। গৃহপালিত এ মশা ঘরে, চৌকির নিচে, পর্দার ভাঁজে, বেসিনের নিচে লুকিয়ে থাকে।
ছোট পাত্রে ৫ দিনের কম জমে থাকা পানিতে এ মশা বংশ বিস্তার করে।
এডিস ইজিপ্টি মশা জঙ্গলে থাকে না। রাতে কামড়ায় না। গায়ে দাগকাটা মশাগুলো একবারে অনেককে কামড়াতে পারে। ম্যালেরিয়া মশার মতো একজনের রক্ত খেয়েই পরে থাকে না।
এছাড়া নর্দমায় নয়, ডোবায় দিনের পর দিন জমে থাকা ময়লা পানিতে নয়, নদী, সাগর, বিলের পরিষ্কার বহমান পানিতে নয়, এই মশা বংশবিস্তার করে ফুলের টবের নিচের জলকান্দার পানিতে, বৃষ্টির দিনে রাস্তার ধারে জমা পানি, নির্মাণ সামগ্রীতে থাকা পানি, পেপসির ক্যান, নারিকেলের খোলায় জমা পানিতে।
ডেঙ্গুজ্বর:
অন্য ভাইরাস জ্বরের মতো ডেঙ্গুজ্বর সাত দিনের বেশি থাকে না। একটানা উচ্চ তাপমাত্রা থেকে ছয় দিনের দিন জ্বর চলে যেতে পারে। দু’দিন পর একদিন জ্বর না থেকে আবার দু’দিনের জ্বর (স্যাডল ব্যাক ফিভার) থাকলে তারপর জ্বর চলে গেল তাও হতে পারে। অন্য ইনফেকশন না হলে, এক্সটেন্ডেড না হলে ডেঙ্গুজ্বর ছয় দিনের বেশি থাকে না।
ব্যথা:
সব জ্বরে বিশেষ করে ভাইরাস জ্বরে গা ম্যাজম্যাজ করে, ব্যথা করে। ডেঙ্গুতে ব্যথা বেশি হয়। অনেকের এত বেশি হয় যে এটাকে হাড় ভাঙার ব্যথার (ব্রেকিং বোন ডিজিস) সঙ্গে তুলনা করে। ডেঙ্গুতে চোখের পেছনে (রেট্রাঅরবিটাল পেইন) হয়।
রক্তক্ষরণ:
চামড়ায়, মুখে, খাদ্যনালিতে, চোখে হতে পারে। তবে বেশি যেটা হয় সেটা হল মেয়েদের। মাসিক একবার হয়ে গেলেও একই মাসে আবার মাসিক হয়।
দানা (র্যাশ):
ডেঙ্গুর টিপিক্যাল র্যাশ বেরোয় জ্বরের ষষ্ঠ দিনে। তখন জ্বর থাকে না। এজন্য এটাকে কনভালেসেন্ট কনফ্লুয়েন্ট পেটিকিয়াল র্যাশ বলে। পায়ে বা হাত থেকে শুরু হয়- দেখলেই চেনা যায়, খুঁজতে হয় না।
ডেঙ্গুতে অন্য র্যাশ হতে পারে সেগুলো টিপিক্যাল নয়। আরেকটা জিনিস হয় জ্বরের প্রথমদিকে- গায়ে চাপ দিলে আঙুলে ছাপ পড়ে অর্থাৎ ফ্লাশিং হয়।
চিকিৎসা:
অন্য জ্বরের মতো প্যারাসিটামল দিয়ে জ্বর নামিয়ে রাখতে হবে। জ্বর নামিয়ে ১০০ রাখলেই চলবে। ৯৭ করার দরকার নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ ব্যবহার করা উচিত না। এনএসআইডি-(ডাইক্লোফেনাক, ইন্ডোমেথাসিন) দ্রুত জ্বর নামিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে শকে নিতে পারে, কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
খাদ্যনালিতে রক্তক্ষরণ ত্বরান্বিত করে জীবনের ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে। সাপোজিটরি নিলে শুধু প্যারাসিটামল, অন্য কিছু নয়। চার ডোজে ভাগ করে প্রতিবারে পাঁচশ’ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া উচিত তার পরেও ১০২-এর বেশি থাকলে একবারে তৎক্ষণাৎ এক হাজার মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে।
পানি:
কয়েকদিন তিন লিটার পানি পান করতে হবে। এটা খুবই দরকার। প্রয়োজনে স্যালাইন নিতে পারলে ভালো। আসলে প্যারাসিটামল ও পানিই ডেঙ্গুর আসল চিকিৎসা।
নিউট্রিশন:
জ্বরের সময় ক্ষুধামন্দা হয়, বমি লাগে। ফলের রস উপকারী পানি এবং অল্পতে বেশি ক্যালরি পাওয়া সম্ভব। স্বাভাবিক খাবার খেতে হবে।