
ক্ষমা চাইলেন ওসি- মেজর (অব.) সিনহা নি’হ’তে’র ঘটনায় শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলায় দুটি জব্দ তালিকা তৈরি; একটির সঙ্গে অপরটির মিল না থাকায় আদালতের কাছে ভুল স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কক্সবাজারের রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের।



বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. দেলোয়ার হোছাইনের আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী বাপ্পী শর্মা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মেজর (অব.) সিনহা হত্যার পর তাদের অবস্থান করা নীলিমা রিসোর্ট থেকে ২৯টি সামগ্রী জব্দ করে রামু থানা পুলিশ। এ ঘটনায় দুটি জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়।



দুটির মধ্যে অমিল থাকায় ব্যাখ্যা জানতে ওসি আবুল খায়েরকে তলব করেন আদালত। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করেন ওসি। একই সঙ্গে লিখিত শোকজের জবাবও জমা দেন তিনি।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গু’লি’তে নি’হ’ত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ।



এ ঘটনার পর নীলিমা রিসোর্টে এসে পুলিশ দুটি রুমের সব মালামাল জব্দ করে সিনহার সহযোগী শিপ্রাকে নিয়ে মা’দ’ক আইনে মামলা করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে তার কাছ থেকে জব্দ করা ২৯টি সামগ্রীর বিষয় সামনে আনেন শ্রিপা। পরে আদালতের নির্দেশে সেসব সামগ্রী মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাবের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
জবানবন্দি দিলেন এপিবিএনের আরও দুই সদস্য
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হ’ত্যা মামলায় রি’মা’ন্ডে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) আরও দুই সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা জবানবন্দি দেন।



স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব এপিবিএনের এএসআই শাহজাহান ও কনস্টেবল রাজীবকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করে। দুপর ২টা থেকে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়া শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়।
এর আগে বুধবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় এপিবিএনের অপর সদস্য কনস্টেবল মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।



সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন আদালত। স্বীকারোক্তি নেয়া শেষে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গু’লি’তে নি’হ’ত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা করে। এ মামলায় সিনহার দুই সফরসঙ্গী কারান্তরীণ হন। পরে তারা জামিনে মুক্ত হন।



এ মামলায় নথিভুক্তসহ সহযোগী আসামি হিসেবে এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, এপিবিএনের তিন সদস্য ও টেকনাফ থানা পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রে’ফ’তা’র করেছে র্যাব।
গ্রেফতারের পর বিভিন্ন সময় প্রত্যেকের সাতদিন করে রি’মা’ন্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। রি’মা’ন্ড শেষে গত সোমবার (২৪ আগস্ট) ওসি প্রদীপসহ পুলিশের সাত সদস্যের আবারও সাতদিন করে রি’মা’ন্ড আবেদন করা হলে আদালত চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রথম দফা রি’মা’ন্ড শেষ হওয়ার আগেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন এপিবিএনের তিন সদস্য কনস্টেবল আবদুল্লাহ, রাজীব ও এএসআই শাহজাহান।