জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হলো কাবা শরীফ !

ধুয়ে পরিষ্কার করা হলো মুসলমানদের পবিত্র কাবা শরিফ। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ধোয়ামুছার এ কাজ সম্পূর্ণ করা হয়।

সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের বাদশাহ ও পবিত্র দুই মসজিদের জিম্মাদার সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের পক্ষ থেকে কাবা শরিফ ধোয়ার কাজে নেতৃত্ব দেন মক্কার আমির যুবরাজ খালিদ আল ফয়সাল।

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে পবিত্র স্থানে ভ্রমণকারীরা যেন রক্ষা পান, সে জন্য কাবা শরিফ ধৌত করার আয়োজন করা হয়।

কাবা শরিফ ধোয়ার কাজ পর্যবেক্ষণে যান মক্কার আমির খালিদ আল ফয়সাল, দুই মসজিদের সভাপতি শেখ ডা. আবদুল রহমান আল সুদাইস এবং অন্য কর্মকর্তারা।

কাবা শরিফের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করেন যুবরাজ খালিদ আল ফয়সাল। জমজম কূপের পানি ও গোলাপ তেলের বিশেষ মিশ্রণ কাপড়ে ভিজিয়ে নিয়ে কাবা শরিফের দেয়াল পরিষ্কার করেন তিনি।

সূত্র : সৌদি গেজেট।

জমজমের পানি কী দাঁড়িয়েই পান করতে হবে?

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জমজম কূপের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন বলে সাধারণত আমরাও দাঁড়িয়েই জমজমের পানি পান করি। অনেকেই জমজমের পানি বসে পান করাকে মারাত্মক পাপের কাজ বলে মনে করেন।

কেউ কেউ বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ভীড়ের কারণে জমজম দাঁড়িয়ে পান করেছেন, তাই স্বাভাবিকভাবে ভীড় ছাড়া দাঁড়িয়ে জমজমের পানি পান করা ঠিক না। বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ধুম্রজাল রয়েছে আমাদের সমাজে।

বস্তুত জমজমের পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে-বসে দু’ভাবেই পান করা জায়েয। ভীড় না থাকলে দাঁড়িয়ে জমজম পান করা জায়েয নেই- এ কথা ঠিক নয়। ভীড় ছাড়াও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা যে জায়েয আছে এ সম্পর্কে ফতোয়ার অনেক কিতাবে এবং হাদিসের ব্যাখ্যাগ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে।

উপরন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন- এ হাদিসের ভিত্তিতে বহু প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞ ইসলামী চিন্তাবিদ, হাদিসের ব্যাখ্যাকারক জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম ও আদব বলেছেন।

আর রাসূলুল্লাহ (সা.) মূলতঃ ভীড়ের কারণে জমজম দাঁড়িয়ে পান করেছেন এটা কোনো সুনিশ্চিত ও চূড়ান্ত কথা নয় এবং তা হা‍দিস ও সাহাবাদের কাজ এবং বক্তব্য দ্বারাও প্রমাণিত নয়; বরং ইসলামী স্কলাররা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দাঁড়িয়ে জমজম পান করার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি ভীড়ের কারণকেও উল্লেখ করেছেন। তারা আরো যে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে থাকেন তা হলো—

১. জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাও যে জায়েজ তা বুঝানোর জন্য।

২. বসার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা অর্থাৎ পান করার স্থানটি ভেজা বা স্যঁতস্যঁতে হওয়ার কারণে তিনি দাঁড়িয়ে পান করেছেন।

সুতরাং এ সব কারণের মধ্যে শুধু একটিকে গ্রহণ করে বাকিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া আদৌ ঠিক নয়।

উল্লেখ্য যে, এ বিষয়গুলো ইসলামী শরিয়তের মৌলিক কোনো বিষয় নয়, সুতরাং এগুলো নিয়ে তর্ক করে খুব সময় নষ্ট করার পক্ষপাতি নন আলেমরা। তবে শুধু জেনে রাখার জন্য এগুলোর আলোচনা হতে পারে।