অবশেষে পিছু হটছে আর্মেনিয়া, বসতে চায় আলোচনায়

শেষমেশ কারাবাখ-নাগরনো নিয়ে আলোচনায় বসতে চায় আর্মেনিয়া। একদিন আগেও আর্মেনিয়ান প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমা নেতাদের অনুরোধ অগ্রাহ্য করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

কিন্তু আজ শুক্রবারই সুর পাল্টে তিনি আলোচনায় বসে এই সংকট নিরসনে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং সংহতি সংঘের মধ্যস্থতায় তার আজারবাইজানের সাথে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। নিজেদের দুর্বলতা লুকিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, তবে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের সবসময়ই অনড় অবস্থান থাকবে।

এদিকে আর্মেনিয়ার আরও ১৫৮ জন্য সেনা মৃত্যুর খবর আসে সংবাদমাধ্যমগুলোতে। সমর বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আজারবাইজানকে মোকাবিলা করার জন্য আর্মেনিয়া যথেষ্ট প্রস্তুত নয়, তাই দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাচ্ছে।

তবে আলোচনার ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি আজারবাইজান। এর আগে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিজেব বলেছেন, ভূমি ফেরত না পাওয়া অবধি যুদ্ধ চালিয়ে যাবে তার দেশ।

আজারবাইজানের সঙ্গে একটি অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছাতে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে আর্মেনিয়া। এদিকে নাগর্নি কারাবাখ অঞ্চলে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ ষষ্ঠদিনে পা রেখেছে। লড়াই আরও তীব্র রূপ নিয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এমন তথ্য মিলেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরেভেন বলেন, সংঘাতের মধ্যস্থতা করতে ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বসতে আর্মেনিয়া প্রস্তুত। অঞ্চলটিতে একটি অস্ত্রবিরতিতে পুর্নপ্রতিষ্ঠায় আমরা সম্মত।

অঞ্চলটি নিয়ে দুই প্রতিবেশী কয়েক দশক ধরে তীব্র সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। তবে রোববার শুরু হওয়া যুদ্ধ গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক।

এদিকে বিতর্কিত অঞ্চল নাগোরনো-কারবাখকে ঘিরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ফ্রান্স, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা বলেছেন, আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সামরিক বাহিনীর মধ্যে অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

এতে আরও বলা হয়, সেইসঙ্গে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের নেতাদেরকেও অবিলম্বে আস্থার সঙ্গে এবং কোনও পূর্বশর্ত ছাড়াই ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপের আওতায় কার্যকর আলোচনা শুরুর প্রতিশ্রুতি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কারাবাখ সংকট নিয়ে দেশের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র।

এই সংঘাতে মধ্যস্থতাকারী অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এন্ড কো-অপারেশন’ (ওএসসিই) মিনস্ক গ্রুপ লড়াই বন্ধে কিভাবে সহায়তা করতে পারে; তা নিয়ে পুতিন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন আলাপ করেছেন।

রাশিয়া লড়াই বন্ধের চেষ্টায় আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরকেও আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে।

নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজারের ভিতরে হলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে, আর্মেনিয়া তাদের সমর্থন দিচ্ছে। ১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটি আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও স্বাধীন দেশ হিসেবে এখনও কারও স্বীকৃতি পায়নি।