
পুনরায় বাবরি মসজিদ তৈরি- আবারও ভারতের বাবরি মসজিদ বিতর্ক চাঙ্গা করলেন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়ার (এসডিপিআই) সচিব ড. তসলিম রাহমানী।
তিনি পুনরায় অযোধ্যাতে বাবরি মসজিদ তৈরি করার হুংকার দিয়েছেন। ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজে রামমন্দির নিয়ে চলা ডিবেটের সময় এই মন্তব্য করেন তিনি।



ড. রহমানী বলেছেন, অযোধ্যাতে বাবরি মসজিদ আবার বানানো হবে তাতে ১০০০ বছর লাগলেও চিন্তা নেই। এসডিপিআই নেতা আরও বলেন, মসজিদ ওখানে ছিল, ওখানে আছে এবং ওখানেই থাকবে। ১০০০ বছর লেগে গেলেও মসজিদ আবার তৈরি করা হবে।
কোর্টের রায় নিয়ে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান ও সর্বোচ্চ আদালতের উপর তার অটুট বিশ্বাস রয়েছে। তবে আমি বার বার বলছি মসজিদ ওখানেই হবে।



আদালতে বিশ্বাস নিয়ে সঞ্চালকের পাল্টা প্ৰশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিশ্বাস আছে বলেই তো ভুল সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছি। তসলিম রাহমানী আরও বলেন, আদালতে বিশ্বাস আছে তাই ভুল রায়ের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম।
প্রসঙ্গত, এর পূর্বেও ভারতীয় মুসলিমদের অধিকার নিয়ে কথা বলায় সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া এর বিরুদ্ধে আগেও এমন উস্কানি ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এমনকি ব্যাঙ্গালুরু দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে এই নেতা গ্রেফতার হয়েছিলেন।



বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে চক্রান্ত করেই: ভারতের হিন্দু বিচারপতি লিবেরহান
প্রায় তিন দশক আগে ভারতের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদবানীসহ ৩২ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছে উত্তর প্রদেশের একটি আদালত।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভাঙা হয়েছিল ভারতের বাবরি মসজিদ। তার ১০ দিন পরে গঠিত হয় সাবেক বিচারপতি মনমোহন সিং লিবেরহানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন। বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে তদন্ত করার জন্য।খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস



২০০৯ সালে রিপোর্ট জমা দেয় কমিশন। লখনৌয়ের সিবিআই আদালত বুধবার জানিয়ে দিয়েছে, বাবরি ভাঙার পিছনে কোনো চক্রান্ত ছিল না। আদবানিরা বরং মসজিদ বাঁচাতে চেয়েছিলেন।
এই রায় আসার পরেই লিবেরহান জানিয়ে দিলেন, তিনি যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তাতে চক্রান্তের কথাই বলা হয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে লিবেরহান জানিয়েছেন, ‘আমার সিদ্ধান্ত ছিল বাবরি ভাঙার পিছনে চক্রান্ত কাজ করেছে। আমি এখনো তা বিশ্বাস করি।
বিস্তারিত পরিকল্পনা করে বাবরি ভাঙা হয়েছিল। উমা ভারতী ভাঙার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কোনো অদৃশ্য শক্তি বাবরি ভাঙেনি, মানুষই তা ভেঙেছিল।’



লিবেরহান কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, আদবানি, জোশী, উমা ভারতীরা সে সময়ের উত্তর প্রদেশ সরকারের সাথে পরামর্শ করে বাবরি মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা করেছিলেন। পিছন থেকে মদত দিয়েছিলেন। তারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে সমর্থন করেছিলেন। কমিশনের বক্তব্য ছিল, করসেবকদের একত্রিত করা স্বতঃস্ফূর্ত ছিল না, বা তারা স্বেচ্ছায় জড়ো হননি, তাদের জড়ো করা হয়েছিল।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙের জন্য আদবানি, জোশী, উমাসহ মোট ৬০ জনকে দায়ী করেছিল কমিশন। সিবিআই আদালতের রায় আসার পরেও লিবেরহানের দাবি, ‘আমার তদন্ত রিপোর্ট ঠিক ছিল।



আমি সৎ থেকেছি। ভয় বা পক্ষপাত দেখাইনি। যা ঘটেছিল তার সত্য বিবরণ দিয়েছি। এখন তা ইতিহাসের অঙ্গ।’ তবে তিনি সিবিআই আদালতের রায় নিয়ে কথা বলতে চাননি। সিবিআই কীভাবে তদন্ত করেছে তা নিয়েও নয়।
তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে আদবানি, বাজেপেয়ী থেকে শুরু করে সকলেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমি যা পেয়েছি, সবই রিপোর্টে উল্লেখ করেছি।’ তার দাবি, ‘উমা ভারতী দায় স্বীকার করেছিলেন। এখন যদি বিচারক বলেন, তিনি নির্দোষ, সেখানে আমি কী করব? আমাকে যে তথ্য দেয়া হয়েছিল, সাক্ষ্য থেকে যা পেয়েছিলাম, তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্তে এসেছি। যেকোনো যুক্তিপূর্ণ মানুষ তাই করতেন।’