
স্পা সেন্টারের নামে দেহ ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন নিতে হাইকোর্টে এসেছিলেন সংগীত শিল্পী ইভা আরমান।
পরিচয় লুকাতে তিনি বোরকায় আবৃত হয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন।



জামিন আবেদনের শুনানি শেষে সংগীত শিল্পী ইভা আরমানকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৬ সপ্তাহ পর ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।



আদালতে ইভা আরমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ব্যারিস্টার অর্পণ চক্রবর্তী ও অ্যাডভোকেট শুভজিৎ ব্যানার্জি।
ব্যারিস্টার অর্পণ চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ২৫ জুন রাজধানীর গুলশান থানায় ইভা আরমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এসআই আনোয়ার হোসেন খান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।



মামলার অভিযোগে বলা হয়, গুলশানের ইভারোজ ভবনে ইভা আরমানসহ আসামিরা যোগসাজশে স্পা সেন্টারের নামে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।
তারা কাজের সুযোগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের দিয়ে পতিতাবৃত্তি ও অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করতেন।



উল্লেখ্য, ইভা আরমান এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমানের প্রাক্তন স্ত্রী। গত বছর সেপ্টেম্বরে মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়।
এরপর তিনি সোহেল আরমান নামে এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। বিচ্ছেদের পর এ সংগীত শিল্পী নামের শেষে অংশ থেকে রহমান ফেলে দিয়ে আরমান যুক্ত করেন।
যে কারণে মাহফুজুর রহমানকে ডিভোর্স দিয়েছেন ইভা রহমান
গত ১৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমানের সাবেক স্ত্রী কণ্ঠশিল্পী ও সংবাদ পাঠিকা ইভা রহমান। তার নতুন স্বামীর নাম সোহেল আরমান।



এই বিয়ের পর নিজের পুরনো পদবিও মুছে ফেলেছেন ইভা। এখন থেকে নিজেকে ইভা আরমান বলেই দাবি করছেন তিনি।
এর আগে চলতি বছরের ৪ জুন ড. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ডিভোর্স পেপার সাবমিট করেন ইভা। চলতি মাসের ১৬ সেপ্টেম্বর তাদের ডিভোর্স প্রক্রিয়া শেষ হয়।



এবার মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন ইভা। দীর্ঘ ৯ বছর সন্তানকে নিয়ে নিঃসঙ্গ দিন কাটানোর পর, সন্তান ও নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মাহফুজের অবহেলা তাকে বিচ্ছেদের পথে ঠেলেছে বলেও মন্তব্য করেন এই গায়িকা।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইভা রহমান বলেন, ‘২০১২ থেকে আমরা আলাদা থাকা শুরু করি। আমি আর আমার ছেলে থাকতাম গুলশানে আর উনি থাকতেন বনানীতে।



এভাবে একটি সম্পর্ক ঝুলন্ত থাকতে পারে না।’ ৯ বছর চেষ্টা করেও সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারেননি বলেও জানান ইভা। এজন্য তিনি মাহফুজুর রহমানের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন।
ইভা আরও জানান, নতুন স্বামীর কাছে গানের ব্যাপারে অনেক অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন। আগামীতে আরও সাবলীল গান করতে পারবেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকে ট্রল করে তাকে গানের পাখি বলেছেন। এ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন এই তিনি। সমালোচকদের গঠনমূলক ট্রল করারও আহ্বান জানান।



উল্লেখ্য, এটিএন বাংলায় সংবাদ পাঠক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেছিলেন ইভা। তখনই এর চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। সেই সম্পর্ককে পূর্ণতা দিয়ে তারা বিয়ে করেন। নিউজ প্রেজেন্টারের পাশাপাশি গায়িকা হিসেবেও পরিচিতি পান ইভা।
তার গাওয়া গানের প্রায় ৩০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-‘মনের না বলা কথা’, ‘মন ভেসে যায়’, ‘মন জোনাকী’, ‘মনে পড়ে যায়’, ‘মনের যে কথা’, ‘মন আধার’, ‘মন থেকে দূরে নও’,’মন আমার’, ‘মন সাগরে ভাসি’ এবং ‘মনের তুলিতে আঁকি’। তার অ্যালবামের বাছাই করা কিছু গানের ভিডিও চিত্রায়ণ হয়েছে দেশে-বিদেশের মনোরম লোকেশনে।